ফ্ল্যাট কেনায় গুরুত্বপূর্ণ বিবেচ্য

warning-dream world properties

ফ্ল্যাট কেনার আগে বিবেচনায় রাখুন (পরামর্শ ও সতর্কতা)

ফ্ল্যাট, একটি জনপ্রিয় শব্দ যা সচরাচর আমরা ব্যবহার করে থাকি। বর্তমান প্রেক্ষাপটে জমি কিনে বাড়ি করা অনেক কঠিন হয়ে পড়েছে। চাহিদা মত জমি পাওয়া একদিকে যেমন কঠিন অন্যদিকে জমির দাম আকাশ ছোয়া। এমন পরিস্থিতিতে সবচেয়ে সহজ সমাধান হিসেবে ফ্ল্যাট ক্রয়ের কথাই সবচেয়ে বেশি বিবেচনা করা হয়।

এই পরিস্থিতির কথা চিন্তা করে ডেভলপার কোম্পানি গুলো অ্যাপার্টমেন্ট তৈরি করছে এবং ফ্ল্যাট হিসেবে বিক্রি করছে। ঢাকাতে স্থায়ী মাথা গোজার ঠিকানা হিসেবে মানুষ ফ্ল্যাট কিনার প্রতি বেশি ঝুকে পড়েছে। ফ্ল্যাট গুলো সুলভ মূল্যে পাওয়া যাওয়ায় তা গ্রাহকদের প্রথম পছন্দ।

তবে এই ফ্ল্যাট কেনার ক্ষেত্রে কিছু বিষয় গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করতে হয়। ফ্ল্যাট কেনার ক্ষেত্রে রয়েছে নানা ঝামেলা যা খুব সহজে এড়ানো সম্ভব যদি একটু সতর্কতা অবলম্বন করা হয়। সাধারণত প্রতারিত হওয়া, সময় মতো ফ্ল্যাটের মালিকানা না পাওয়া, অতিরিক্ত অর্থ চাওয়া ও রাজউক অনুমোদিত না হওয়া ইত্যাদি সমস্যার সম্মুখীন হন গ্রাহকরা ফ্ল্যাট কিনার সময়। তাই এসব ঝামেলা এড়াতে যেসব বিষয় গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করতে হবে তা তুলে ধরা হলো :

  • প্রথমত যে প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির ফ্ল্যাটটি কিনতে যাচ্ছেন তার মালিকানা আছে কি না, তা যাচাই করুন। নির্ধারিত ফ্ল্যাটটি যে জমিতে অবস্থিত তার সর্বশেষ রেকর্ডে বিক্রয়কারীর নাম উল্লেখ আছে কি না তা যাচাই করুন।এছাড়া সকল খতিয়ানের ক্রম(সিএস, আরএস) মিলিয়ে দেখুন। আর রিয়েল এস্টেট কোম্পানিটির যথাযথ নিবন্ধন আছে কি না এবং রিহ্যাবের সদস্য কি না জেনে নিতে হবে। জমিটি যদি ডেভেলপার কোম্পানি কোনো মালিকের কাছ থেকে নিয়ে থাকে, তাহলে এ সম্পর্কে চুক্তিপত্র আছে কি না যাচাই করতে হবে।
  • জমির নামজারি ঠিক আছে কি না এবং ওয়ারিশ সংক্রান্ত কোন বিষয় আছে কিনা, বণ্টনের মোকদ্দমা আছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে হবে।
  • ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধের বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে। ভূমি কর না দেওয়ার কারণে সার্টিফিকেট মামলা হয়, এধরনের কোনো মামলা আছে কি না, এ বিষয়ে খোঁজ নিতে হবে।
  • জমিটির ওপর অন্য যে কোনো মামলা আছে কি না, জেনে নিতে হবে।
  • বিক্রয়ের জন্য প্রস্তাবিত ফ্ল্যাটটি নকশার সঙ্গে বাস্তব অবস্থা মিলিয়ে রয়েছে কিনা তা সরেজমিনে দেখতে হবে। প্রয়োজনে আশপাশের ভূমিমালিকদের কাছ থেকে খতিয়ানে দাগ নম্বর জেনে মেলাতে হবে।
  • অবশ্যই স্পষ্ট করে সব শর্ত উল্লেখ করে আইনগত উপায়ে চুক্তি সম্পাদন করে একটি কপি নিজের কাছে রাখতে হবে।
  • ফ্ল্যাটটি যে ভবন তা নির্মাণের জন্য রাজউকের অনুমোদন আছে কি না এবং এ-সংক্রান্ত কাগজপত্র দেখে নিতে হবে।
  • বিদ্যুৎ-সংযোগ আছে কি না তা যাচাই করে নিতে হবে। গ্যাস-সংযোগ লাইনটি বৈধ ভাবে নেওয়া হয়েছে কি না তা যাচাই করতে হবে। যদিও বর্তমানে নতুন কোনো ফ্ল্যাটে গ্যাস-সংযোগ দেওয়া হচ্ছে না।
  • প্রস্তাবিত ফ্ল্যাটটি সরকারের খাসজমিতে পড়েছে কি না কিংবা সরকারের কোনো ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার অংশ হতে পারে কি না বিষয়টি খতিয়ে দেখতে হবে। জমিটি অর্পিত সম্পত্তি কিংবা পরিত্যক্ত সম্পত্তির তালিকায় আছে কি না, সেটাও যাচাই করতে হবে। জমিটি অধিগ্রহণ হয়েছে কি না বা প্রক্রিয়াধীন কি না অথবা কোর্ট অব ওয়ার্ডসের জমি কি না, তা খেয়াল রাখতে হবে।
  • ঋণের জন্য ফ্ল্যাটটি কোনো ব্যাংকের কাছে বন্ধক রয়েছে কি না, তা অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে।
  • কোনো প্রকার মধ্যস্থতাকারীর ব্যক্তি(দালাল) বা প্রতিষ্ঠান মাধ্যমে ফ্ল্যাটটি না কিনে সরাসরি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করে কেনা ভালো।
  • পরিচ্ছন্ন পরিবেশের নিশ্চয়তা।
  • ফ্ল্যাটটি যদি কিস্তির মাধ্যমে কেনার কথা থাকে, তাহলে কয়টি কিস্তি এবং কবে হস্তান্তর হবে, এ বিষয়ে সুস্পষ্ট করে দলিলে লেখা থাকতে হবে। যদি কোনো কারণে না কেনা যায়, তাহলে এটি কোন উপায়ে নিষ্পত্তি হবে, তা-ও স্পষ্ট উল্লেখ থাকতে হবে।
  • ফ্ল্যাটটি এর আগে অন্য কারও কাছে বিক্রি হয়েছে কি না, খোঁজ নিতে হবে। সব ধরনের চার্জ, রেজিস্ট্রেশন ফি এবং দায়দায়িত্ব স্পষ্ট করে জেনে নিতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে ঝামেলা না হয়।
Exquisite Balcony Garden

ডাউন পেমেন্ট/ অর্থ পরিশোধের আগে করণীয়:

  • জমির দলিল সঠিক কিনা তা ভালো করে যাচাই করে নিতে হবে।
  • ডেভেলপার কোম্পানির সরকারি অনুমোদন আছে কি না তা দেখে নিতে হবে।
  • রাজউক কর্তৃক অনুমোদিত প্ল্যান এর কপি আছে কিনা তা দেখতে হবে।
  • ডেভেলপার কোম্পানি রিহ্যাব (রিয়েল এস্টেট এন্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ) সদস্য কি না তা যাচাই করে নিতে হবে।
  • ফ্ল্যাট বরাদ্দের নির্ধারিত সময় এবং সব শর্ত ভালো করে বুঝে নিতে হবে।
Eclectic Home Garden

আইন অনুযায়ী ক্রেতা হিসেবে আপনি যেসব সুবিধা পেতে পারেন:

  • ফ্ল্যাট কিনার সময় চুক্তিতে ক্রয়-বিক্রয় সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য অবশ্যই উল্লেখ করতে হবে এবং এ বিষয়ে গ্রাহক সকল তথ্য জানার অধিকার রাখে।
  • ফ্ল্যাট তৈরিতে যেসব উপকরণ ব্যবহার করা হবে চুক্তিতে অবশ্যই তার বিবরণ থাকতে হবে। পরিকল্পিত নকশাও নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ক্রেতাকে দিতে বাধ্য থাকবেন।
  • চুক্তির ভিত্তিতে পছন্দসই ফ্ল্যাট বরাদ্দ দেবেন। আবার বিনা অনুমতিতে বরাদ্দ করা ফ্ল্যাট পরিবর্তন করতে পারবেন না।
  • চুক্তিতে উল্লেখিত শর্তের বাইরে অতিরিক্ত কোনো অর্থ দিতে ক্রেতা বাধ্য থাকবেন না। যদি কোনো উন্নতমানের সরঞ্জাম সংযোজনের দরকার হয়, তাহলে দুই পক্ষের পারস্পরিক সম্মতিক্রমে অতিরিক্ত অর্থ দেওয়া যেতে পারে।
  • সম্পূর্ণ মূল্য পরিশোধের ৩ মাসের মধ্যে প্রতিষ্ঠান তার ক্রেতাকে মালিকানা হস্তান্তর, দলিল তৈরি এবং নিবন্ধনের যাবতীয় কাজ সম্পাদন করে দেবেন। হস্তান্তরের সময় আয়তনে কম-বেশি হলে তার ক্রয়মূল্য অনুযায়ী যে অর্থ গ্রাহক ফেরত পাবে ঐ অর্থ ৩ মাসের মধ্যে সমন্বয় করতে হবে।

উপরক্ত বিষয়গুলো জানা একজন গ্রাহকের অধিকার যা আইন অনুযায়ী গ্রাহক প্রয়োগ করতে পারে। এসিওর বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় রিয়েল এস্টেট কোম্পানি। আমরা ২০০৭ সালে দেশের নগরবাসীর জীবনযাত্রার মান উন্নত করার লক্ষ্যে যাত্রা শুরু করি। শুরু থেকে, আমরা জীবন চূড়ান্ত স্বাচ্ছন্দ্য সহ আবাসিক এবং বাণিজ্যিক সম্পত্তি সরবরাহ করে আসছি। যখন মান বজায় রাখার কথা আসে, আমরা বিল্ডিং প্রকল্পের প্রতিটি পর্যায়ে সর্বোত্তম প্রচেষ্টাটি নিশ্চিত করে।

Compare listings

Compare

Compare