ঢাকায় বসবাসের সেরা জায়গাগুলো
বিশ্বের উন্নত দেশগুলো শুধু রাষ্ট্রীয় বিশেষ প্রয়োজন ও প্রশাসনিক কাজের জন্য রাজধানীকে বেছে নিলেও বাংলাদেশের ক্ষেত্রে বিষয়টি মোটেও তেমন নয়। তবে সরকারি কর্মকাণ্ড ও আয় রোজগারের পাশাপাশি সবকিছুই যেন রাজধানী ঢাকা কেন্দ্রিক।যার উপর সমগ্র জাতির সচল বা অচল থাকা নির্ভর করে। এখানে যেমন উচ্চ বিত্তের মানুষ জনের বসবাস তেমনি এখনে বসবাসকৃত মানুষের বেশিরভাগই নিম্ন বিত্ত , নিম্ন মধ্য বিত্ত , মধ্য বিত্ত আর উচ্চ মধ্য বিত্তের মানুষ।এজন্য বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা হয়ে উঠেছে বিশ্বের অন্যতম জনবহুল নগর। ১০৪ বর্গমাইল এলাকা নিয়ে ঢাকার অবস্থান, এখানে দুই কোটিরও বেশি মানুষ বসবাস করে এবং প্রতিদিন সংখ্যাটি যেমন বাড়ছে তেমনি ঢাকা সিটির আয়তনও বাড়ছে । জনসংখ্যার ঘনত্ব বাড়ার সাথে সাথে নাগরিক সুবিধা সংশ্লিষ্ট চাহিদাও বাড়ছে। তবে বসবাসের জন্য আদর্শ জায়গা হতে হলে- যেগুলো থাকা খুবই জ্রুরি।
- যেখানে প্রচুর গাছ পালা সমেত উম্মুক্ত স্থান থাকবে ।
- গাড়ি ছাড়া চলাফেরা করতে পারা যায়।
- কাছাকাছি নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসগুলি খুঁজে পাওয়া যায় ।
- পর্যাপ্ত রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা বিদ্যমান ।
- ভাল মানের বাসা।
- মানসসম্মত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
- কাছাকাছি হাসপাতালসহ সুচিকিৎসা সেবা।
- বিনোদনমূলক জায়গার উপস্থিতি।
- সুন্দর প্রতিবেশি ।
- নিকটবর্তী জরুরী সরকারি বেসরকারি সেবা সমূহের অবস্থান ।
- উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা ও পর্যাপ্ত পরিবহণ সুবিধা।
- পরিচ্ছন্ন পরিবেশের নিশ্চয়তা।
- নিরবচ্ছিন্ন ইউটিলিটি সরবরাহ সহ সকল আধুনিক নাগরিক সুবিধা।
- সর্বাগ্রে সাধ্যের মধ্যে স্বাদ গ্রহণের সুবিধা বিদ্যমান থাকা।
সুযোগ-সুবিধা বিবেচনায় ঢাকায় ১৩ টি স্থানের চাহিদা সবচেয়ে বেশি।
জাঁকজমকপূর্ণ জীবনে বনানী
সময়ের বিবর্তনে বনানীতে এখন দেশের সবচেয়ে বিলাসী মানুষদের বসবাস। আধুনিক বনানী একদিকে যেমন ছায়াঘেরা আবাসিক এলাকা একই সাথে আবার ব্যস্ত বাণিজ্যিক অঞ্চলও বটে, যে কারণে দেশের বাইরে থেকে আসা অনেক গুরুত্তপূর্ণ মানুষের বাসও এই এলাকায় । কর্পোরেট অফিস থেকে শুরু করে নামীদামী ব্র্যান্ডের বহু আউটলেট আছে রাস্তার দুপাশ জুড়ে। আবাসিক এবং বাণিজ্যিক, উভয় কারণেই বনানী আজ মূল্যবান এক এলাকায় পরিণত।
পরিষ্কার, পরিকল্পিত এবং উন্নতমানের রাস্তাঘাটের জন্য বনানী এলাকাকে ঢাকার মডেল বলা যায়। আশেপাশে থাকা দূতাবাসগুলোর কারণে আছে কড়া নিরাপত্তাব্যবস্থাও। বিদেশীসহ আরও অনেকে বনানীতে বাস করতে চান বিমানবন্দরে যাতায়াতের সুবিধার জন্য। বিলাসবহুল বাড়ি ও অ্যাপার্টমেন্ট নিয়ে গড়ে উঠেছে বনানী। আছে খেলার মাঠ, পার্ক, সুপারমার্কেট, বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান , চিকিৎসা সেবা ও উপাসনালয়সহ নাগরিক জীবনের সব ধরণের সুযোগসুবিধা।
মনোরম ও উচ্ছ্বাসপূর্ণ বসবাসে ধানমন্ডি
১৯৫০ সালের দিকে ধানমন্ডি আবাসিক এলাকা হিসেবে গড়ে উঠতে শুরু করে। এই এলাকাটি শহরের অভিজাত শ্রেণীর জন্য নির্মাণ করা হলেও সময়ের সাথে সাথে সর্ব পর্যায়ের মানুষের ঠিকানা হয়ে ওঠে। মনোরম ও উচ্ছ্বাসপূর্ণ একটি এলাকা ধানমন্ডি, স্বাচ্ছন্দ্যে বসবাসের জন্য আবাসিক এলাকা হিসেবে ধানমন্ডিতে থাকার সুবিধা বরাবরই রয়েছে। আবাসিক বাণিজ্যিক সবদিক থেকেই এই এলাকা পরিপূর্ণ।
গত কয়েক দশকে আবাসিক-বাণিজ্যিক সব প্রতিষ্ঠান মিলিয়ে ঢাকার শীর্স আবাসিক এলাকার একটিতে পরিণত হয়েছে ধানমন্ডি । এই এলাকার মানুষের কখনই স্বাচ্ছন্দ্য ও সুবিধার অভাব হয়নি। অভ্যন্তরীণ প্রতিটি রাস্তাতেই অগণিত সংখ্যক বাড়ি ও প্রপার্টি রয়েছে যা একটি আরেকটির চেয়ে ভাল। ধানমন্ডি এলাকার। অ্যাপার্টমেন্টগুলি, বিশেষত ধানমন্ডি লেকের আশেপাশের প্রায় প্রতিটি ভবনই নান্দনিক এবং এগুলোর মূল্যমানও বেশ।
ঢাকা শহরের মাঝে সম্ভবত সবচেয়ে বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সমাহার আছে ধানমন্ডিতেই। স্কুল, কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়, বলা যায় উচ্চমানের শিক্ষাপ্রদান করতে পারে এদের সবগুলোই ধানমন্ডিবাসীর হাতের নাগালে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মতই ধানমন্ডিতে প্রাপ্ত চিকিৎসা সুবিধাও অসাধারণ। শুধু ঢাকা নয় বরং দেশের নানান প্রান্ত থেকে মানুষজন ধানমন্ডিতে আসে সুচিকিৎসার আশায়। এই এলাকায় ১০০টিরও বেশি আছে প্রয়োজন মাফিক সাধারণ এবং স্পেশালাইজড হাসপাতাল।
ধানমন্ডির লেক! সবুজে শ্যামলে ঘেরা একটি লেক। যেখানে মানুষ হাটাহাটি থেকে শুরু করে বন্ধুদের সাথে আড্ডা, ব্যায়াম সহ সবকিছুই করে এখানে। সকল বয়সের এবং শ্রেণীপেশার মানুষের দুদন্ড অবসর কাটানোর জন্য ধানমন্ডি লেকের জুড়ি নেই। ধানমণ্ডি সব রকমের খাবারের জন্য বেশ জনপ্রিয়। বাঙালি খাবার হোক কিংবা ফার্স্ট ফুড সবকিছুই এখানে সেরা।
শহরের প্রান্তে আরেক শহর উত্তরা
ঢাকা শহরের জনজট হতে একটু দূরে নিরিবিলি আবাসিক এলাকা হিসাবে ১৯৮০ ও ১৯৯০ এর দশকে বাংলাদেশ সরকার মধ্যবিত্ত ও উচ্চ মধ্যবিত্তদের আবাসস্থল হিসাবে এই এলাকাটি গড়ে তোলে। ঢাকার খোলামেলা ও অনেকটা বায়ু দূষণমুক্ত এলাকার একটি হলো উত্তরা। এই এলাকাটি স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল , বিভিন্ন বিপনীবিতান এবং শপিংমলের উত্তম জায়গা হয়ে উঠেছে। সারি সারি বৃহৎ সব মার্কেট কমপ্লেক্সসহ এই এলাকাটি প্রকৃতপক্ষে উচ্চ মধ্যবিত্তের আবাসস্থল।
উত্তরা এখন ঢাকার প্রশস্ত রাস্তা সমৃদ্ধ পরিকল্পিত একটি শহর । এমন সব অবকাঠামো এখানে হয়েছে যেগুলো ভালো একটা জীবন যাপনের উপযোগী। আগামি কয়েক বছরের মধ্যে ঢাকা স্থানান্তরিত হবে পূর্বাচলে যেটা উত্তরার খুব কাছে। খুব কম সময়ের মধ্যে শুরু হবে মেট্রো-রেল যেটা উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত যাবে। এছাড়া, এলাকাটি বিমানবন্দরের কাছে, তাই দেশের বাইরে থেকে আসা বিভিন্ন মানুষের বাসও এখানে । অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও উত্তরের দিকে চলে যাচ্ছে।”ফলে মানুষ থাকার জন্য উত্তরাকে পছন্দ করছে।”
আধুনিকতায় ও নিরাপত্তায় বারিধারা
গুলশানের নিকটে গুলশান-বারিধারা লেক বরাবর অবস্থিত বারিধারা এলাকাটি উচ্চমানের আবাসিক এলাকা। সমস্ত আধুনিক সুবিধায় পরিপুর্ণ বিলাসবহুল , শান্ত , জাঁকজমকপূর্ণ ও পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা সমৃদ্ধ ব্যয়বহুল বসবাসের জায়গা বারিধারা।
এই এলাকাটি কূটনীতিকদের জন্য বিশেষভাবে তৈরি এবং অনেক দেশের দূতাবাস এখানে অবস্থিত। দক্ষিণ-পূর্ব পাশে কূটনীতিক এলাকা, পূর্ব পাশে সাধারণ আবাসিক এলাকা, এবং কাছাকাছি উত্তর-পূর্ব পাশে একটি ডিওএইচএস এলাকা। বিশেষত বারিধারার আবাসিক বাড়ি বা এপার্টমেন্টগুলোতে একটি বড় লিভিংস্পেস থাকে যা পরিবারসহ বসবাসের জন্য চমৎকার।
নতুন, পুরাতন ঢাকা আর ব্যবসা বানিজ্যের কেন্দ্রস্থল ওয়ারী ।
বুড়িগঙ্গা নদীর পাড়ে গড়ে ওঠা আদি ঢাকা শহর যা ঢাকার প্রথম পরিকল্পিত আবাসিক এলাকা ওয়ারী । ঢাকার বিখ্যাত দর্শনীয় স্থান বলধা গার্ডেনও ওয়ারীতে অবস্থিত। এলাকায় রয়েছে বেশকিছু স্বনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এছাড়াও সার্বক্ষণিক জরুরি সেবায় রয়েছে হাসপাতাল, হাতের কাছেই রয়েছে, সুপার শপ, শপিংমল ব্যবসায়ের পাইকারী- মার্কেট ইত্যাদি। জিরো পয়েন্ট গুলিস্তান আর আর নৌ যোগাযোগের সর্ববৃহৎ টার্মিনাল সদর ঘাট এবং বানিজ্যিক এলাকা মতিঝিলের মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত ওয়ারী। যেকোনো মানুষের বসবাসের উপযোগী এই এলাকা ।
পরিবারসহ বসবাসের নিরাপদ স্থান লালমাটিয়া
সম্পূর্ণরূপে ব্লকে ব্লকে ভাগ করা ঢাকার আদি আবাসিক এলাকাগুলোর একটি হলো লালমাটিয়া এবং এর আঁকাবাঁকা সরু পথ এবং লাল ইঁটের দালানগুলোর জন্য এটি সুপরিচিত। এই এলাকার অনন্য বৈশিষ্ট্য হলো এর লাল রংয়ের মাটি এবং এ কারণেই এলাকাটির নাম হয়েছে লালমাটিয়া।
সুনিয়ন্ত্রিত নিরাপত্তা ব্যবস্থার কারণে লালমাটিয়া ঢাকার সবচেয়ে নিরাপদ এলাকাগুলোর একটি হিসেবে পরিচিত। এখানকার পরিবেশ বেশ শান্ত ও মনোরম । যার ফলে, শিশু রয়েছে এমন পরিবারগুলোর জন্য এটি খুবই চমৎকার একটি বসবাসের জায়গা। এখানে শিশুদের জন্য বেশ কয়েকটি খেলার মাঠ রয়েছে, যা ঢাকা শহরের অন্যত্র সাধারণত দেখা যায় না। এলাকাতে অবস্থিত অনেকগুলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান ও কিছু এনজির জন্যও লালমাটিয়া সুপরিচিত।
ঢাকায় নতুন আগমনকারীদের গন্তব্য মিরপুর।
শেরে বাংলা নগর ক্রিকেট স্টেডিয়াম, ঢাকা চিড়িয়াখানা এবং জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যানসহ ঢাকার প্রধান আকর্ষণীয় স্থানগুলোর বেশ কয়েকটি ই মিরপুরে অবস্থিত। অনেক গুরুত্ত পূর্ণ সরকারি অফিস গুলো এখন মিরপুরের দিকে স্থানান্তরিত হচ্ছে । ছাত্রদের থাকার জন্য এবং তূলনা মূলক সুলভে এপার্টমেন্ট খোঁজার জন্য এটি একটি ভাল জায়গা। মিরপুরে অনেক স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল বিভিন্ন বিপনীবিতান এবং শপিংমলের পর্যাপ্ত সুবিধা রয়েছে। ঢাকার যেকোনো স্থানে যাতায়েতে সবচেয়ে বেশি পরিবহণ সুবিধা রয়েছে এখানে। তাই ঢাকায় নতুন আগমনকারীদের গন্তব্য মিরপুরে হতে পারে।
সুলভে উন্নত স্থানে বসবাসের গন্তব্য বনশ্রী
বনশ্রী আবাসিক এলাকা হিসেবে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। ব্লকে ব্লকে সাজানো এলাকাটি উন্নত পরিকল্পনার মাধ্যমে গড়ে উঠছে বনশ্রী এলাকা । হাতির ঝিলের সঙ্গে প্রধান ব্যবসায়ী ও বাণিজ্যিক সংযোগ রাস্তা রয়েছে।রয়েছে ঢাকা শহর থেকে দ্রূত বের হওয়ার লিংক রোড সমূহ । সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, এখানে জীবনযাপনের উপকরণের খরচ তুলনা মূলক কম। ।আধুনিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও চিকিৎসা ব্যবস্থা এলাকাকে জনপ্রিয় করে তুলেছে । বনশ্রী হল মধ্যবিত্ত পরিবারগুলির বাস করার জন্য সবচেয়ে সাশ্রয়ী এবং উপযুক্ত স্থান
প্রশান্ত ও প্রশস্ত আবাসনে বসুন্ধরা
আবাসিক এলাকা হিসেবে আলাদা জনপ্রিয়তা আছে বসুন্ধরার। মূল শহরের কোলাহল থেকে খানিকটা দূরে, ছায়াঘেরা, খোলা-মেলা ও শান্ত পরিবেশে সুপরিল্পিতভাবে গড়ে উঠেছে চমৎকার এই সিটিটি । ইন্টারন্যাশনাল স্কুল ঢাকা, ভিকারুন্নেসা নূন স্কুল এন্ড কলেজসহ আরো অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সমৃদ্ধ এই এলাকাটি। দেশের গুরুত্বপূর্ণ তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়- নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি, ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ এবং আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ; অবস্থিত বসুন্ধরার ভিতরেই। সুচিকিৎসার জন্য বসুন্ধরায় রয়েছে বিশেষায়িত অ্যাপোলো হাসপাতাল। শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরটিও এই এলাকার অতি নিকটে। যার সুবাদে অনেক ব্যবসায়ী-মনা বিদেশীরাও এখানে বসবাস করছে। এখানে রয়েছে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার সবচেয়ে বড় শপিং মল যমুনা ফিউচার পার্ক। বিশাল এই শপিং মলের ভিতরে পাওয়া যাবে না এমন কিছুই যেনো নেই। পরিকল্পনা ছিল বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় থাকবে বাংলো বা ছিমছাম সাজানো গোছানো বিত্তশালীদের বাড়ির আধিক্য। তবে সময়ের সাথে সাথে এই এলাকায় সর্ব শ্রেণীর মানুষ ও ছাত্র ছাত্রীরা বসবাস করতে শুরু করেছে।
আভিজাত্যের বসবাস ও কুটনীতিক পাড়া গুলশান ।
আধুনিক সুবিধার এমন কিছু নাই যেখানে পাওয়া যাবেনা এমন এলাকাটিই হলো গুলশান। গুলশান হলো ঢাকার এমন একটি স্থান যেখানে বিদেশী দূতাবাস এবং বেশ কিছু উন্নতমানের ক্লাব অবস্থিত। গুলশান এলাকাটি প্রথমে একটি মডেল কমিউনিটি হিসেবে গড়ে উঠেছিল এবং সময়ের সাথে সাথে তা বিস্তৃত হয়ে আজকের এই আবাসিক এবং বাণিজ্যিক স্থাপনাসমূহের মিলন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠেছে। গুলশান এলাকায় অভিজাত বুটিকশপ, মার্কেট এবং শপিংমল রয়েছে। এখানে অনেকগুলো মসজিদ এবং বেশকিছু গীর্জা ও মিশন রয়েছে। বিশেষায়িত হাসপাতাল আদর্শ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বহু ব্যাংক ও ব্যসায়ের কর্পোরেট অফিস থেকে শুরু করে নামীদামী ব্র্যান্ডের আউটলেট আর মান স্মমত পাঁচ তারকা হোটেল আছে গুলশানে । মোট কথায় সাজানো গুছানো জাঁকজমকপূর্ণ শান্ত ও নিরাপ্ততা বেষ্টিত আভিজাত ও বিলাসবহুল একটি অত্যধুনিক একটি বসবাসের স্থান এই এলাকা।
বিদেশি দূতাবাস বেশি থাকায় এটি বাংলাদেশে অবস্থানের জন্য, বিশেষ করে খৃষ্টান এবং মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের বিশিষ্টজনদের কাছে, আদর্শ স্থান হিসেবে বিবেচিত। গুলশানের উপশহর এলাকার স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যপূর্ণ বিলাসবহুল বাড়ি এবং এপার্টমেন্টগুলো সেইসব বাড়ির মালিক বা ভাড়াটিয়াদের জন্য উত্তম স্থান যারা সুপরিসর বাসস্থান এবং বিনোদন মূলক বড় বাজেটের জীবন যাত্রায় অব্যস্ত ।
কোলাহলমুক্ত আবাস্থল নিকুঞ্জ
আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর আর খিলক্ষেত অঞ্চল নিয়ে ঢাকার পশ্চিম উত্তর কোণে দাঁড়িয়ে আছে চমৎকার পরিকল্পিত আবাসিক এলাকা নিকুঞ্জ। শহর থেকে কিছুটা বাইরে হওয়ায় সাজানো গোছানো, কোলাহলমুক্ত । সাথেই এয়ারপোর্ট রোড হওয়ায় বাকি ঢাকার সাথে আছে চমৎকার যোগাযোগব্যবস্থা। এলাকায় আছে বিলাসবহুল হোটেল এবং বিভিন্ন সরকারী বেসরকারি অফিসের উপস্থিতি।
আর যোগাযোগব্যবস্থার কথা উঠলে সেখানে অবশ্যই আসবে দেশের সবচেয়ে বড় বিমানবন্দর শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের । কুড়িল ফ্লাইওভার ও পূর্বাচল, ৩০০ ফিট; যেটি নিকুঞ্জ থেকে খুবই কাছে অবস্থিত। অভ্যন্তরীণ এবং বহির্গামী, উভয় ধরণের যোগাযোগব্যবস্থার দিক দিয়েই নিকুঞ্জ একটি চমৎকার এলাকা।
তবে এই এলাকার বেশিরভাগ ভবনই বেশ সুন্দর কাঠামোতে নির্মিত। এখানকার তুলনামূলক সুলভ ভাড়া এবং ফ্ল্যাটের সহজপ্রাপ্যতার জন্যে। ব্যাচেলরদের মধ্যে নিকুঞ্জ এলাকাটি বেশ জনপ্রিয় । নিকুঞ্জে আছে বেশ কিছু উন্নত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। চিকিৎসা সেবায় রয়েছে খুবই কাছে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল ।
বিলাসবহুল খাবারের জন্য আছে হোটেল রিজেন্সি এবং লে মেরিডিয়ান। এর বাইরে নিকুঞ্জের স্ট্রিট ফুডও বেশ জনপ্রিয় । তাই বলা যায় বসবাসের জন্য আবাসিক এলাকা হিসেবে আদর্শ একটি এলাকা নিকুঞ্জ।
ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ মোহাম্মদপুর।
এলাকার বাসিন্দাদের জন্য সর্বাধিক স্বাছন্দ্য এবং সুবিধা নিশ্চিত করার জন্য পরিকল্পিত, সুসজ্জিত ও জলাবদ্ধতা মুক্ত করে মোহাম্মদপুরকে চমৎকারভাবে গড়া হয়। সহজলভ্য আবাসনের চিন্তা সামনে রেখে ঢাকার প্রথম পরিকল্পিত আবাসিক অঞ্চল হিসেবে ১৯৫৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল মোহাম্মদপুর। সর্বস্তরের মানুষের আবাস ছিল এ এলাকায় যা এখনও রয়েছে।
বর্তমানে বৃহত্তম অ্যাপার্টমেন্ট জোন জাপান গার্ডেন সিটি তৈরি হয়েছে এই মোহাম্মদপুরেই, মোহাম্মদিয়া হাউজিং সোসাইটি , বায়তুল আমান হাউজিং সোসাইটি, কাদেরাবাদ হাউজিং, চান মিয়া হাউজিং – এদের প্রতিটিই চমৎকার আবাসন প্রকল্প , এবং এগুলি মোহাম্মদপুরে যারা বাড়ি খুঁজছেন, চমৎকার গন্তব্য হতে পাড়ে ।
মোহাম্মদপুরে আছে ঢাকার কয়েকটি প্রাচীন এবং মর্যাদাপূর্ণ স্কুল এবং কলেজ। মোহাম্মদপুর সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়, মোহাম্মদপুর সরকারী কলেজ, সেন্ট জোসেফ উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজের মতো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এছাড়া এই এলাকায় বেশ কয়েকটি মাদ্রাসা বা ধর্মীয় স্কুল এবং বিশেষ যত্ন প্রয়োজন এমন শিশুদের জন্য রয়েছে বিশেষ শিক্ষামূলক কেন্দ্র।
মোহাম্মদপুর অঞ্চলে বেশ কয়েকটি চমৎকার সরকারী বেসরকারী স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র রয়েছে। এই চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলি সাধারণ ও বিশেষায়িত সেবার পাশাপাশি মানসিক এবং প্রজনন সম্পর্কিত সমস্যার সাধারণ চিকিৎসা দিতে সক্ষম । এছাড়াও ধানমন্ডি এলাকার সান্নিধ্যে হওয়ায় যে কোন প্রয়োজনে ধানমন্ডির সমস্ত হাসপাতাল এবং চিকিত্সা প্রতিষ্ঠানগুলিতে সহজেই গমন করতে পারেন মোহাম্মদপুরবাসী।
মোগল স্থাপত্যশৈলীতে ১৭ শতাব্দীতে শায়েস্তা খান কর্তৃক নির্মিত বিখ্যাত সাত গম্বুজ মসজিদ । এলাকায় মসজিদগুলির পাশাপাশি মোহাম্মদপুরের আশেপাশে বেশ কয়েকটি মন্দিরও রয়েছে। তাই মোহম্মদপুরের বিভিন্ন ধর্মের বাসিন্দাদের জন্য একটি চমৎকার জায়গা, ঐতিহাসিক শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতি সৌধ , জেনেভা ক্যাম্পও এখানে অবস্থিত ।
মোস্তাকিমের চাপ, বোবার বিরিয়ানি এবং এরকম আরও অনেকগুলো মুখরোচক খাবারের দোকান মোহাম্মদপুর এলাকাকে করে তোলেছে ভোজনরসিকদের ঠিকানা। সকল দিক বিবেচনায় সাশ্রয়ী মূল্যের আবাসনের সন্ধানপ্রার্থী লোকেদের জন্য এলাকাটি সময়ের সাথে সাথে আরও বেশি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
শিক্ষা, চিকিৎসা, সাহিত্যের মিলনস্থল আজিমপুর
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় , ঢাকা মেডিকেল , বুয়েট, ভিকারুন্নেসা নূন স্কুল এন্ড কলেজ, অনেক রকম কার্যকর কোচিং সেন্টার , ঢাকা নিউ মার্কেট , দেশের বৃহত্তম নীলক্ষেত বই মার্কেট আর ঢাকার সর্ব বৃহৎ আজিমপুর কবরস্থানকে ঘিরে আজিমপুরের অবস্থান। সরকারী সু উচ্চ কোয়াটার গুলো এলাকে আরও সুন্দর করে তুলেছে । পুরান-নতুন ঢাকার মুখরোচক খাবারের মিলন মেলা ঘটেছে এখানে। তাই শিক্ষা, চিকিৎসা, সাহিত্য, ভোজন-প্রিয়তা সব মিলে আজিমপুর একটি চমৎকার বসবাসের জায়গা। উচ্চ বিলাসীদের জন্য যেমন রয়েছে লাক্সারিয়াস অ্যাপার্টমেন্ট তেমনি ব্যচেলর ও ছাত্র ছাত্রীদের জন্যও রয়ছে সুলভে থাকার সুবিধা।